সদ্য ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ নাটোর-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষার্থীরা সড়কের মাঝে অবস্থান নিলেও পুলিশ সড়কের দুই লেনে যানবাহন চলাচলের জায়গা করে দেয়। এতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে নাটোর শহরের বড়হরিশপুর বাইপাস চত্বরে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে তারা রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
এর আগে গত ৩ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিতরা প্রথমে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন, যা পরে ৭২ ঘণ্টা করা হয়।
পদবঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, নতুন কমিটিতে আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকা ব্যক্তিরাও স্থান পেয়েছে এবং পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একই ব্যক্তিকে একাধিক পদে রাখার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্তদেরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয় যা সংগঠনের মূল আদর্শের পুরোপুরি পরিপন্থি।
এই অবস্থান কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলার আগের কমিটির সদস্য সচিব মশিউর রহমান ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন সংগঠনের জন্য কাজ করে এলেও কোনো নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে পুরোনো কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে ত্যাগীদের প্রতি অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যারা ১ দফার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল সেই সব কর্মীদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক।’
তিনি আরো বলেন, ‘কমিটি বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করছেন না। সংবাদ সম্মেলনে আমরা সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিলেও রমজান মাসে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে এই অবস্থান কর্মসূচিতে সড়ক অবরোধ করিনি। শেষবারের মতো আমরা আল্টিমেটাম দিচ্ছি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি এই বিষয়টির সমাধান করা না হয় রেলপথ অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি আমরা পালন করব।’
অবস্থান কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন পদবঞ্চিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আব্দুল্লাহ আল নোমান পিয়াস, সুব্রত দেব, মেহেদী হাসান, স্বাধীন, তামিম হাসানসহ অনেকে।
এই বিষয়ে নাটোর জেলার নবগঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনবকমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম বলেন, ‘তারা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে দেব না। কিসের জন্য তারা জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে আমাদের তা বোধগম্য নয়। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারকে অসম্মানিত করছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি ২৯৫ সদস্যবিশিষ্ট বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলা কমিটি গঠিত হয়। উক্ত কমিটি বিলুপ্ত বা স্থগিতাদেশ না দিয়েই আবার ছয় মাসের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে নতুন করে দুই শতাধিক সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।