ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে বুঝিয়ে দিতে সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম।
আজ বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পেশাজীবী জোট আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আবদুস সালাম তার বক্তব্যে বলেন, “গত সাত দিন ধরে ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন।” তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন তোলেন, “কেন আপনারা দেশটাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন? দুই-একজন উপদেষ্টার কারণে কি এই সরকার ব্যর্থ হবে?” তিনি আরও বলেন, “কোর্ট রায় দিয়েছে, নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে। এখন যদি ইশরাক মেয়রের চেয়ারে বসেন তাহলে কার স্বার্থে আঘাত লাগবে? নির্বাচনের আগে দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক, আশা করি সরকার তা চায় না।”
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আমরা চাই না এই সরকার ব্যর্থ হোক, কারণ তা হলে দেশ আবার অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাবে। এ কারণে এত কিছুর পরেও আমরা চুপ করে আছি।” তিনি বিএনপির সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “অনেকেই বিএনপির সমালোচনা করেন তাতে আমরা কিছু মনে করি না। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। নির্বাচন কমিশনের গেজেট তো বাতিল করা হয়নি, তাহলে কেন ইশরাককে মেয়রের পদ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না?” তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমি বলতে চাই, আজকের মধ্যেই ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।”
আবদুস সালাম চট্টগ্রাম পোর্ট বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত এবং রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক করিডর তৈরির প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি চট্টগ্রাম পোর্ট বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার চক্রান্তকে ‘জাতির সঙ্গে বেইমানি’ বলে অভিহিত করেন। এছাড়া, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক করিডর তৈরির প্রচেষ্টাকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ আখ্যায়িত করেন। তিনি সরকারকে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “তাহলে আমরা মাঠে নেমে এসে তার প্রতিবাদ করব।”
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে আবদুস সালাম বলেন, “বিদেশি কোম্পানির কাছে পোর্ট আপনি দিবেনই, এটা কি আপনার বাবার সম্পত্তি? শেখ হাসিনা এমন কাজ করতে চেয়েছিল। তাহলে আপনি কি শেখ হাসিনার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন? আমরা সেটা হতে দিতে চাই না।”
জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “৯ মাস পার হয়ে গেছে, এখনো কোনো কিছুর লক্ষণ নেই। বলছেন যে জাতীয় ঐকমত্য হয়নি। এটা তো কোনোদিনই হবে না। যেসব ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়েই নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।”