বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি দাবি করেন, খালেদা জিয়াকে ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করে এমন একটি ঘরে রেখে অসুস্থ করে তোলা হয়েছিল।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শেখ বাজার এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করেছে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “দেশের উন্নয়ন করে মানুষ। আর কিছু মানুষ আছে দেশের সম্পদ লুট করে। প্রফেসর ইউনুস কোনো রাজনীতির লোক না। তারপরেও তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের ব্যবস্থা করতে পারছি না। আমরা আইনের শাসন চাই। যারা দোষ করবে তাদের যেন বিচার হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ কাউকে ছাড়েনি। আলেমদেরও ছাড়েনি। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের ধর্ম ঠিক করতে পালন করতে পারেনি। আগে সাংবাদিকরা সব কথা বলতে পারেনি। ডিজিটাল আইনে জড়িয়ে দিতো। এখন কথা বলতে পারছে। আজ আমাদের ছেলেরা রক্ত দিয়েছে বলেই নতুন করে সুযোগ এসেছে দেশটাকে সুন্দর করার। আমরা বাংলাদেশকে একটা সুন্দর দেশ দেখতে চাই। আমাদের ছেলেরা যে বাংলাদেশ তৈরি করে দিয়েছে। আমরা চাই ছেলেরা যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারে। যেন গুমের শিকার না হয়।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা পরিস্কার করে বলতে পারি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে ভাই বলে সম্বোধন করেছি। আলাদা করার চেষ্টা করেছিল সাবেক এমপি রমেশ চন্দ্র সেন। আমরা হিন্দু ভাইদের নিরাপত্তা দিতে চাই। এক সাথে বসবাস করতে চাই। বিএনপি বিশ্বাস করে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ এক সাথে বসবাস করে। দেশ স্বাধীন হয়েছে তবে এখনো অধিকার পাইনি। তাই ভোট দিয়ে আমরা সরকার গঠন করবো। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছি।”
তিনি মায়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “মায়ানমারে যুদ্ধ চলছে। আপনারা জানেন রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে বসবাস করছে। তাদের ফিরিয়ে দিতে কোনো কাজ করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা আরেকটা গাজায় পরিণত হতে চাই না। আমরা রোহিঙ্গা নিয়ে সমস্যায় পড়ে আছি। আমরা সংস্কার চাই তবে তার সাথে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। প্রতিনিধি নির্বাচন করা দরকার দেশের স্বার্থে, মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে। আমরা মনে করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ আমরা সব সময় বঞ্চিত। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচিত হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আমি কখনো পালায় যাইনি। আমি ন্যায়ের পথে থাকবো যতদিন বেঁচে থাকবো। সবাই মিলে মানুষের জন্য সবার জন্য কাজ করবো।”
নির্বাচনী গণসংযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিসসহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।