মানিকগঞ্জের তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লার তৈরি উড়োজাহাজ দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তার এই সাফল্যের পথে এবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। বিমান তৈরির খরচসহ সব ধরনের লজিস্টিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এই বেসরকারি এয়ারলাইন্সটি।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম জানান, জুলহাসের গবেষণাকে এগিয়ে নিতে এবং তার উড়োজাহাজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিতে আগ্রহী তারা। এমনকি, গবেষণার জন্য বা প্রশিক্ষণের জন্য যদি তার বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও ইউএস-বাংলা তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
আজ, ৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উত্তরা কার্যালয়ে এসে জুলহাস মোল্লা তাদের প্রস্তাব শোনেন। এ সময় তিনি জানান, ইউএস-বাংলার সঙ্গে কীভাবে কাজ করতে পারেন, সে বিষয়ে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জুলহাসের এই সফলতা দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা। এখন শুধু অপেক্ষা, তার গবেষণা আরও বড় পরিসরে বিস্তৃত হওয়ার।
জুলহাস মোল্লার মূল বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়। নদী ভাঙনের কারণে তার পরিবার বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় বসবাস করছে। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। ২০১৪ সালে তিনি জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। আর্থিক সংকটের কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা জানান, ছোটবেলা থেকেই জুলহাস বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিস কেটে কিছু একটা তৈরি করতে চাইতো। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হতো, সে বলতো, একদিন তোমরা দেখবে আমি কী বানিয়েছি। গত চার বছর ধরে সে বিমান তৈরি করে উড্ডয়নের চেষ্টা করছিল, তবে সফল হতে পারছিল না। কিন্তু এবার তার বিমানটি সফলভাবে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। গত ৩ মার্চ যমুনার চরে তার বিমানটি প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতায় উঠেছিল এবং পরদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি ওড়ানো হয়।
এই তরুণ উদ্ভাবকের সাফল্য সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তার এই উদ্যোগ দেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে সাহস জোগাচ্ছে।
এর আগে, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জুলহাসের গবেষণাকে উৎসাহিত করতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।