দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্বামী মহরম আলীর (৪৫) বাড়িতে স্ত্রী লাকি বেগম (২৬) এবং তাদের ৬ বছর বয়সী মেয়ে মরিয়মের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এলুয়াড়ী ইউনিয়নের লিচুপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মহরম আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহরম আলীর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর সাত বছর আগে লাকি বেগমের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। লাকির পরিবারের অভিযোগ, মহরম তাকে পরকীয়ার সন্দেহে প্রায়ই নির্যাতন করতেন।
লাকি বেগম পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চকযামেনি কাজিপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।
ঘটনার দিন সকালে মহরম আলী প্রথম স্ত্রীর মেয়েকে সেমাই-চিনি দিতে যান। এরপর দুপুরে লাকি বেগম ও তার মেয়ে মরিয়ম একই রশিতে গলায় দড়ি দিয়েছে বলে স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
মৃত লাকি বেগমের মা মঞ্জিলা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, “আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমার মেয়ের জামাই মহরম ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে আজ তোর বেটিক মারতে মারতে মারি ফেলাম। পাশ থেকে মেয়ে বলে মা আমার চুলের মুঠি ধরে মারডাং করছে। তখন মেয়েকে বলি যা কিছু হোক বাড়ি থেকে কোথাও যাবি না। জামাই আমার মেয়েকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।”
ফুলবাড়ী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির বারান্দায় মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখি। উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মহরম আলীকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা হতবাক এবং মর্মাহত। তারা আশা করছেন, পুলিশ দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে।