কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় ধরে অপারেশন থিয়েটারে রাখার পর রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর হাসপাতালটির চিকিৎসক ও নার্সরা পলাতক রয়েছেন।
রোববার রাতে নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকার ট্রমা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পরে মৃতের স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃত ইমরান হোসেন (২১) নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতা হুমায়ুন মিয়া একজন প্রবাসী।
ইমরান দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তার পরিবার অভিযোগ করেছে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ট্রমা হাসপাতালে ডা. আতাউর রহমানের শরণাপন্ন হলে, চিকিৎসক তাকে সার্জারির পরামর্শ দেন। গত শুক্রবার সকালে অপারেশন শুরু হলেও, নির্ধারিত চার ঘণ্টার পরিবর্তে সাত ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলতে থাকে।
ইমরানের স্বজনরা জানান, অপারেশনের পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রোববার বিকেলে তারা ইমরানের সাড়া না পেয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে লাইফ সাপোর্টের কথা বলে এবং পরে বিভিন্ন অজুহাতে মৃত্যুর খবর গোপন রাখে।
মৃতের চাচা জাকির হোসেন জানান, “সামান্য অপারেশনের কথা বলে সাত ঘণ্টা ওটিতে রেখেছিল। লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পরও তিনদিন আমাদের রোগীকে দেখতে দেয়নি। আইসিইউতে ঢুকে দেখি মৃত। তবুও আমাদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি ও ওষুধের খরচ নিয়েছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “২৫ হাজার টাকার অপারেশনের কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।”
মৃতের মা নাজমা বেগম অভিযোগ করেন, “তারা আমার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে। বিভিন্ন পরীক্ষার কথা বলে টাকা নিয়েছে, কিন্তু মৃত্যুর খবর জানায়নি।”
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”