বেলারুশ সীমান্ত থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় অধিকার সাময়িকভাবে স্থগিত করার লক্ষ্যে পোল্যান্ডের একটি বিতর্কিত বিল দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষেও পাশ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সিনেট এই বিলের প্রতি সমর্থন জানায়, যা এর আগে নিম্নকক্ষ ‘সেইম’ থেকে অনুমোদিত হয়েছিল।
সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য, ৭২ জন সিনেটর, বিলের পক্ষে ভোট দেন। এখন কেবল পোলিশ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষা, যার মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হবে। তবে, এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এই আইন কার্যকর হলে, পোল্যান্ড সরকার বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন সাময়িকভাবে প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
পোল্যান্ড সরকার তাদের নতুন অভিবাসন কৌশলের অংশ হিসেবে এই বিলটি উত্থাপন করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা।
পোল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ অভিযোগ করে আসছে, রাশিয়া ও বেলারুশ পরিকল্পিতভাবে ইউরোপীয় সীমান্তে অভিবাসী ঢোকাচ্ছে।
নতুন আইনে পোলিশ সরকার সীমান্তের নির্দিষ্ট অংশে ৬০ দিনের জন্য আশ্রয় প্রার্থনার অধিকার স্থগিত করতে পারবে। পার্লামেন্টের মাধ্যমে এই সময়সীমা বাড়ানো বা অনির্দিষ্টকালের জন্য বহাল রাখার সুযোগও থাকছে।
তবে, অভিভাবকহীন শিশু, গর্ভবতী নারী এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের মতো কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে আশ্রয় অধিকার বহাল থাকবে। এছাড়াও, বেলারুশে ফেরত পাঠানো হলে যাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে, তারাও আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারবে।
আইন অনুযায়ী, সরকার এখন সীমান্তের নির্দিষ্ট অংশ চিহ্নিত করবে যেখানে এই স্থগিতাদেশ প্রযোজ্য হবে। বামপন্থীরা কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করলেও তা গৃহীত হয়নি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হেলসিংকি ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই আইনের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের লিডিয়া গল বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দেশ হিসেবে পোল্যান্ডের উচিত মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা এবং শরণার্থীদের আশ্রয় নিশ্চিত করা। তিনি পোল্যান্ডকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এই আইন পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে অবৈধ ‘পুশব্যাক’কে বৈধতা দিতে পারে।