পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় ‘জাফর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রীদের সশস্ত্র বিদ্রোহীরা জিম্মি করেছে। বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দাবি করেছে, জিম্মিদের উদ্ধার করতে আসা নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ২০ জন সদস্য নিহত হয়েছে এবং স্থলপথে তাদের প্রতিরোধ করা হয়েছে। তবে, আকাশ থেকে ড্রোন ও হেলিকপ্টার দিয়ে সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে, যা জিম্মিদের জীবনকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলুচিস্তানের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশোয়ারে যাওয়ার সময় ট্রেনটি সশস্ত্র জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়। বিএলএ জানিয়েছে, তারা নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের মুক্তি দিয়েছে, তবে সেনা, গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ১৮২ জনকে জিম্মি করে রেখেছে।
পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানিয়েছে, ওই এলাকায় জঙ্গি ও সেনাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে এবং উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। তবে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।
বিএলএ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে উদ্ধার অভিযান বন্ধ করার কঠোর হুমকি দিয়েছে। তারা বলেছে, ড্রোন ও হেলিকপ্টার থেকে হামলা বন্ধ না করা হলে এক ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে হত্যা করা হবে। জঙ্গি গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ বলেছেন, “যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী বা পুলিশ কোনো ধরনের অভিযান চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে হত্যা করা হবে।” তিনি ট্রেনের যাত্রীদের জিম্মি করার কথা স্বীকার করে বলেছেন, “যেকোনো সামরিক অভিযানের জবাব সমান শক্তিতে দেওয়া হবে।”
বেলুচিস্তানের রেলওয়ে বিভাগের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বেলুচিস্তানের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় ট্রেনটিতে হামলা হয়েছে। ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছেছেন। এলাকাটি দুর্গম পাহাড়ি হওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন পাঠানো হয়েছে, যাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
এই ঘটনায় জিম্মিদের জীবন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিএলএ-এর হুমকি এবং আকাশপথে চলমান সামরিক অভিযান জিম্মিদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।