পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের জিম্মি করেছে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে এই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল।
বিএলএ তাদের বিবৃতিতে জানায়, তারা নারী ও শিশু যাত্রীদের মুক্তি দিয়েছে। বর্তমানে ১৮২ জন জিম্মি তাদের হাতে রয়েছে, যাদের মধ্যে পাকিস্তানি সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যও রয়েছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। তারা আরও দাবি করেছে, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সঙ্গে তাদের বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র দিয়ে লড়াই চলছে।
ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। তবে, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে বিলম্ব হচ্ছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে, যাতে অতিরিক্ত সেনা সদস্য রয়েছে।
বিএলএ’র মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ একাধিক বিবৃতিতে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তারা দাবি করেছে, তাদের হামলায় ১১ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। যদিও, পাকিস্তান সরকার এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।
উদ্ধার অভিযান বন্ধের জন্য বিএলএ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে। তারা জানিয়েছে, যদি ড্রোন হামলা বন্ধ না করা হয়, তবে এক ঘণ্টার মধ্যে সকল জিম্মিকে হত্যা করা হবে। জিয়ান্দ বেলুচ বলেন, “যদি কোনো সামরিক বা পুলিশি অভিযান চালানো হয়, তবে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে হত্যা করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “যেকোনো সামরিক অভিযানের জবাব সমান শক্তিতে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ছয়জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে এবং কয়েকশ যাত্রী আমাদের হাতে জিম্মি রয়েছে। বেলুচ লিবারেশন আর্মি এই অভিযানের পূর্ণ দায় স্বীকার করছে।”
পাকিস্তান রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি বেলুচিস্তানের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশোয়ারের দিকে যাচ্ছিল। মুশকাফ এলাকায় পৌঁছানোর পর এটি বিএলএ’র হামলার শিকার হয়। ট্রেনটি জিম্মি হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।