পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই বাজারে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে লেবু, বেগুন, শসা, মুরগি, মাছ এবং মাংসের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাসের শেষ সময় হওয়ায় এবং রোজার বাড়তি চাহিদার কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে খেজুর, ছোলা, চিঁড়া, মুড়ি, গুড়-এর মতো রোজার গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সামগ্রীর দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ১৮০-২০০ টাকা ছিল। একইভাবে সোনালী মুরগির দাম বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার শুরুতে ক্রেতারা বেশি পরিমাণে মুরগি কেনেন, যার কারণে দাম বাড়ার প্রবণতা রয়েছে।
শুধু মুরগি নয়, বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে কিছুটা কম ছিল। খাসির মাংসের দামও প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে, যা এখন ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও, চাষের চিংড়ি, কই, শিং, তেলাপিয়া, রুই এবং পাঙাশ মাছের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
তবে স্বস্তির খবর এই যে, আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজির দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। যেমন, প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লেবুর দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে সাধারণ মানের লেবুর হালি ছিল ২০-৪০ টাকা, যা এখন ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় লেবু বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং দেশি শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে বেগুন ও শসার দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কম ছিল।
অন্যদিকে, খেজুর, ছোলা, চিঁড়া, মুড়ি, গুড়-এর মতো রমজানের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। রোজার আগে সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়েছে, যার ফলে আমদানি বেড়েছে এবং দাম কমেছে। এক মাস আগের তুলনায় ছোলার দামও কেজিতে ১৫ টাকার মতো কমে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিঁড়া, মুড়ি, গুড়-এর দামও আগের মতোই রয়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি চিঁড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আখের গুড় ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, খেজুরের গুড় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং মুড়ি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিয়ে এখনো সংকট কাটেনি। অনেক দোকানেই এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
সব মিলিয়ে, রোজা শুরুর আগেই বাজারে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের উপর একটি বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে।