সমাজে নারীর প্রকৃত মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। একইসঙ্গে, ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৮ মার্চ) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামো গঠনে, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় এবং জাতীয় সংকট মোকাবিলায় নারীর অবদান অনস্বীকার্য। সাম্প্রতিক গণআন্দোলনেও নারীরা সামনের সারিতে থেকেছেন, যেখানে অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন।”
সম্প্রতি নারী নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মতো জঘন্য অপরাধের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। গতকালই (৭ মার্চ) মাগুরায় একটি ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে অন্তত ১১,৭৫৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং ৬,৩০৫ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমরা এই বর্বরতা ও নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।”
তারা আরও বলেন, “ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসলামই নারীর সম্মান, মর্যাদা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। ইসলাম আগমনের পূর্বে নারী ছিল চরম অবহেলিত ও শোষিত। ইসলাম নারীকে কন্যা, স্ত্রী ও মা হিসেবে প্রতিটি পর্যায়ে অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারীর নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি ইসলামী অনুশাসনের বাস্তবায়ন অপরিহার্য।”
তারা অভিযোগ করেন, “বর্তমান সময়ে নারী স্বাধীনতার নামে নারীকে পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে। মিডিয়া, ফ্যাশন শিল্প ও কর্পোরেট সংস্কৃতিতে নারীকে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, পারিবারিক অস্থিরতা, নারী নির্যাতন ও নিরাপত্তাহীনতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। নারী দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা শোনা গেলেও, বাস্তবে নারীর অধিকার রক্ষায় ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।”
“আমরা বিশ্বাস করি, আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত হলেই নারীর প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশ্ব নারী দিবসে আমরা সমাজের সকল স্তরে নারীর সম্মান, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামের বিধান পরিপূর্ণভাবে অনুসরণের আহ্বান জানাই,” বিবৃতিতে যোগ করেন তারা।