সুপারশপে পণ্য বিক্রি: নির্ধারিত দামেই, বাড়তি ভ্যাট নয়
ডেস্ক রিপোর্টার
আপডেট সময় :
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
৪৮
বার পঠিত
সুপারশপে কেনাকাটায় এখন থেকে ক্রেতাদের বাড়তি মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে না। পণ্যের গায়ে মুদ্রিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) অনুযায়ী দাম দিলেই হবে। এর কারণ, পণ্যের মূল্যের মধ্যেই ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতদিন সুপারশপে কেনাকাটার সময় অতিরিক্ত সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হতো।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক আদেশে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের মূসক আইন ও বিধি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. বদরুজ্জামান মুন্সী স্বাক্ষরিত আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আদেশে, সুপারশপের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোক বা না হোক, আয়তন নির্বিশেষে যেকোনো স্বতন্ত্র এবং পরিপূর্ণ দোকান, যেখানে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত, জীবাণুমুক্ত ও প্রিজারভেটিভবিহীন মাছ-মাংস, চাল-ডাল, শাক-সবজি, ফল-মূলসহ দৈনন্দিন ব্যবহার্য গৃহস্থালি ও মনোহারী পণ্য বিক্রি করা হয়।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, গত ৯ জানুয়ারি থেকে ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, সুপারশপের ক্ষেত্রেও ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভোক্তা অধিকার রক্ষা, ব্যবসা সহজীকরণ এবং আদর্শ ভ্যাট ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুপারশপের জন্য এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সুপারশপ যদি সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে (এমআরপি) পণ্য বিক্রি করে, তাহলে সেই মূল্যের মধ্যেই ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত থাকায় ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত ভ্যাট আদায়ের সুযোগ নেই। ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রদানকারী সুপারশপগুলো আইনের অন্যান্য বিধান মেনে উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণ করতে পারবে। তবে, ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রদান করলে রেয়াত গ্রহণের আইনি সুযোগ থাকবে না।
সুপারশপের মালিকদের সাথে আলোচনার পর এনবিআরের মূসক আইন ও বিধি শাখা ভ্যাট তুলে নেওয়ার এই নির্দেশনা জারি করে।
আদেশে বলা হয়েছে, সুপারশপগুলো যেহেতু বিভিন্ন পণ্য আমদানি বা স্থানীয়ভাবে ক্রয় করে (উৎপাদন ব্যতীত) বিক্রি করে, তাই ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করলে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর অন্যান্য বিধান মেনে উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপকরণ-উৎপাদ সহগ ঘোষণা দাখিল করতে হবে না।
উপকরণ-উৎপাদন সহগ হলো কোনো পণ্য বা সেবায় নতুন উপকরণ যোগ হয়ে কতটুকু মূল্য সংযোজন হলো, সেটি পরিমাপ করা। এর ফলে, নতুন মূল্য সংযোজনের জন্য ভ্যাট দিতে হয়।
সুপারশপে যেহেতু অনেক পণ্যে নতুন করে কোনো মূল্য সংযোজন করা হয় না, তাই রেয়াত পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হচ্ছিল। পরবর্তীতে, দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে এনবিআর এই ভ্যাট থেকে সরে এসেছে।
সর্বশেষ বাজেটের মাধ্যমে সুপারশপে কেনাকাটায় সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। এর আগে, বিভিন্ন সময়ে দেড় শতাংশ, ২ শতাংশ, ৪ বা ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। কোনো ভ্যালু এডিশন না হলেও বিভিন্ন পণ্যে এই ভ্যাট থাকায় চেইন সুপার শপের মালিকরা আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক আলোচনাও হয়।
নতুন এই নিয়মের ফলে, সুপারশপে পণ্য বিক্রির আগেই ভ্যাটসহ পণ্যের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এবং সুপারশপগুলো তাদের নিজস্ব মূল্য সংযোজনের অংশের ভ্যাট দিয়ে আগের পর্যায় থেকে ভ্যাট রেয়াত পাবে।