গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর জুলাই ও আগস্টের শুরুতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ককে চিঠি লেখেন।
পরবর্তী পদক্ষেপে তদন্তের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রুরি ম্যানগোভেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা সফর করেন।
এরপর তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের মূল দল তথা তথ্যানুসন্ধান দল এক মাসের বেশি সময় বাংলাদেশে অবস্থান করে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গত জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে। তদন্তের স্বার্থে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ সময় দুপুরে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত মাসের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘ তাদের খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে মতামতের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছিল। সরকার গত সপ্তাহে মতামত জানিয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় দেড়’শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ঘটনা ও এর কারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন।
একটি সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের নির্দেশে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন ঘটেছে বলে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন প্রমাণ পেয়েছে। একই সঙ্গে ওই ঘটনাগুলোর আরো তদন্ত করার জন্য সরকারকে সুপারিশ বা পরামর্শ দিয়েছে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন।
তবে ওই সুপারিশ বা পরামর্শগুলো বাংলাদেশ মানতে বাধ্য নয়। অন্যদিকে এ ধরনের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তথ্য-উপাত্ত আদালতে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরার নজির রয়েছে।