বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের সাম্প্রতিক বর্ধিত সভায় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এই সভাটি জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কে প্রধান অতিথি করে এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির পক্ষে থেকে আরো জানানো হয়, স্বৈরাচার বিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষ পর্যায়ে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী রাজনৈতিক দল সমূহের যুগপৎ এক দফা আন্দোলনের পথ ধরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছে।
ফ্যাসিবাদের পতন: সভায় মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়, কারণ দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে।
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা: মহান একুশে, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচার/ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
খালেদা জিয়ার সুস্থতা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয় এবং তার নৈতিক নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
তারেক রহমানের নেতৃত্ব: তারেক রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয়, যিনি কঠিন সময়ে দলের দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন।
রাষ্ট্র সংস্কার: ভিশন ২০৩০ এবং ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার আলোকে রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে অন্যান্য দল/সংগঠনের সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ: নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
ফ্যাসিবাদী সরকারের অপরাধ: ফ্যাসিবাদী সরকারের গুম, খুন, মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের ব্যাখ্যা দাবি করা হয় এবং তাদের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
জনবান্ধব কর্মসূচি: জনগণকে আকৃষ্ট করার জন্য জনবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মধ্যে সক্রিয় হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
দলীয় শৃঙ্খলা: দলীয় নীতি, আদর্শ, কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবহেলা এবং দুর্নীতি-অনাচার থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তগুলো বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।