পাহাড়ে মোবাইল টাওয়ার জিম্মি, ইউপিডিএফের চাঁদা দাবি মাসে ৩ কোটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট সময় :
বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
১৫৪
বার পঠিত
পার্বত্য চট্টগ্রামে বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির নতুন কৌশল নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ (United People’s Democratic Front) মোবাইল টাওয়ার সচল রাখতে মাসিক ৩ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এই দাবিতে রাজি না হওয়ায় তারা রবি কোম্পানির ২১টি নেটওয়ার্ক টাওয়ার ভাঙচুর করেছে এবং টাওয়ার মেরামতের জন্য যাওয়া এক শ্রমিককে অপহরণ করেছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইউপিডিএফ এককালীন ৫ কোটি টাকা এবং প্রতি মাসে ৩৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। এই বিপুল পরিমাণ চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা টাওয়ারগুলো নষ্ট করে দেয়। অপহরণ করা শ্রমিক রবি কোম্পানির সিকিউরিটি দায়িত্বে থাকা হাইজিন সার্ভিস লিমিটেডের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মী ছিলেন।
কোম্পানির একজন কর্মকর্তা জানান, খাগড়াছড়ির পানছড়ির ৩ নম্বর টাওয়ারের জেনারেটর মেরামত করতে গেলে মঙ্গলবার বিকালে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে মুঠোফোনে রবির কর্মকর্তাদের সেখানে যেতে বলা হয়।
পানছড়ি থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানান, তারা অপহরণের ঘটনাটি শুনেছেন এবং জানার চেষ্টা করছেন। তবে, অপহৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অপহরণের শিকার ব্যক্তিকে চেঙ্গি ইউনিয়নের ইউপিডিএফ নিয়ন্ত্রিত মনিপুর এলাকায় রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, তিনি অপহরণের বিষয়টি শোনেননি। তবে, কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
জানা গেছে, রবি কোম্পানি সারা দেশে তাদের টাওয়ার সচল রাখতে পারলেও পাহাড়ে তাদের প্রতি মাসে প্রায় ৭০ লাখ টাকা গুনতে হয়। পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোকে চাঁদা হিসেবে এই টাকা পরিশোধ করতে হয়। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি চাঁদা দাবি করেছে।
টাওয়ার পরিচালনাকারী কোম্পানির স্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে পাহাড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার পরিচালনা করছেন।
সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মাসে প্রায় তিন কোটি টাকা পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলীয় সন্ত্রাসীদের প্রদান করে বেসরকারি মোবাইল অপারেটরগুলো। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইউপিডিএফ তাদের রাজনৈতিক কূট-কৌশল তথা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র থেকে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের মিশনে নেমেছে। এই মিশনের অংশ হিসেবেই ভারতে অস্ত্র সংগ্রহে পাঠানো হয়েছে ইউপিডিএফ’র অন্তত ২০ জন উচ্চ পর্যায়ের কালেক্টরকে।
সম্প্রতি মিজোরামে ও ত্রিপুরায় ইউপিডিএফ এর বেশ কয়েকজন কালেক্টর অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র একে-৪৭ রাইফেলসহ গোলাবারুদ নিয়ে সেখানকার পুলিশ ও বিএসএফ’র হাতে আটক হওয়ার পর ইউপিডিএফ’র অস্ত্র সংগ্রহের বিষয়টি সামনে আসে।