জুয়া এবং পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলো বন্ধে সরকারকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির কারণ দেখিয়ে এই আহ্বান জানায়। একইসঙ্গে, এই সাইটগুলো কার্যকরভাবে বন্ধ করতে না পারার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর (ডট)-এর ব্যর্থতার সমালোচনা করেছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এই ওয়েবসাইটগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের নৈতিকতার ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব।
তিনি জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন, জুয়া এবং পর্নোগ্রাফির সাইট-লিংক বন্ধ করা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে বিটিআরসি এসব সাইট-লিংক বন্ধ করতে গিয়ে উল্টো অনেক ই-কমার্স এবং ফ্রিল্যান্সারদের আইপি ব্লক করেছিল। ফলে তাদের কাজ করতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। এছাড়া বিটিআরসিও আইএসপিদের নির্দেশ দেয় জুয়া এবং পর্নোগ্রাফি সাইট-লিংক ব্লক করার জন্য।
সংগঠনের বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়েছে যে, আইএসপিরা কি চাইলেই এসব ব্লক করতে পারেন? বাস্তবতা হচ্ছে, ব্লক করার সক্ষমতা রয়েছে একমাত্র বিটিআরসি এবং ডটের। মূল কাজটি করছে ডট। কিন্তু এক্ষেত্রে ডটের সক্ষমতা মাত্র ৪৫ শতাংশ। ফলে বাকি ৫৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ বাইপাস হয়ে গ্রাহকদের ডিভাইসে প্রবেশ করছে।
মহিউদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, ২০১৯ সালে তৎকালীন সরকার দুই দফায় ১৭৮টি ও ৩৩১টি জুয়ার সাইট-লিংক বন্ধ করে। যদিও শনাক্তকরণ করা হয় প্রায় ২২৩৫টি জুয়ার সাইট। পরে ২০২২ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত বিটিআরসি ১২ হাজার তিনটি অনলাইন জুয়ার বেটিং সাইট-লিংক বন্ধ করেছিল বলে দাবি করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ জুয়া ও পর্নোগ্রাফির সাইট-লিংক বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
মহিউদ্দিন আহমেদ পরিস্থিতির জরুরি অবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন, উল্লেখ করেছেন যে, পবিত্র রমজান মাসেও পর্নোগ্রাফি সাইটগুলো চালু রয়েছে। দেশে ধর্ষণ আর বিকৃত মানসিকতার অন্যতম কারণ এই পর্নোগ্রাফি । তিনি সরকারের কাছে এই ওয়েবসাইটগুলো দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানান।
পাশাপাশি, মানুষকে সচেতন করা, সাইবার নিরাপত্তা শেখানো আর প্রচার চালানোর কথাও বলেন।