আওয়ামী লীগের বিচার, দলের নিবন্ধন বাতিল এবং তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আজ শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে দলটি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আজ বিকেল ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার রাতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগসহ ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের নিবন্ধন বাতিল করে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এ দাবিতে শনিবার বিকেল ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এনসিপি, ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে দলের সকল নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শুক্রবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে ‘গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিস্ট দল’ আখ্যায়িত করে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর একটি রাজনৈতিক দল নয়, তারা গণহত্যাকারী সংগঠন। এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার তাদের নেই। জনগণ ইতিমধ্যে জুলাইয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে দিয়েছে।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার জন্য আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। বিচার চলাকালীন তাদের নিবন্ধন বাতিল করে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ একটি মাফিয়া ও ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী। তাদের রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই’—এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারপ্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়। আমরা তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত।’
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগকে গণহত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো বিচার শুরু হয়নি। একই সাথে তিনি সকলকে “স্বৈরাচার ও গণহত্যাকারীদের” বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এনসিপির এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দলটির নেতারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করার জন্য তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।