রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :

রমজানে স্বস্তির নিঃশ্বাস: মাছ-মাংসের বাজার স্বাভাবিকের পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

রোজা শুরুর আগে অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়া মাছ-মাংসের বাজারে অবশেষে স্বস্তির সুবাতাস বইছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে মাছের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। রমজানের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় চাহিদা কমে যাওয়ায় সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দামও নিম্নমুখী। বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করছেন, এই স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে রমজান মাসে মাছ-মাংসের দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজার পরিস্থিতির এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত রমজানের তুলনায় এবারের বাজার পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। হাতেগোনা কয়েকটি পণ্য ছাড়া প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতির দিকে।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়, যা রোজার প্রথম দিনে ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা কমে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এছাড়াও, দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা গেছে। রমজানের শুরুর দিকের তুলনায় প্রায় সব ধরনের মাছের দাম ২০-৫০ টাকা কমেছে। আজকের বাজারে বড় আকৃতির রুই প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা, কাতল ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০-৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০-৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০-৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০-৭০০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০-১০০০ টাকা এবং দেশি শিং ১০০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছর রোজায় শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম আকাশছোঁয়া থাকলেও এবার বাজার অনেকটাই স্থিতিশীল। ভোজ্যতেল, বেগুন ও লেবুর দাম সামান্য বাড়লেও, অন্যান্য পণ্যের দাম কমতির দিকে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সারা বছর বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

এক ক্রেতা বলেন, “আজ ব্রয়লার মুরগি কিনেছি ২০০ টাকা কেজি দরে। শুনেছি, বাজারের ভেতরের দিকে আরও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। শবেবরাতের আগে মুরগির দাম ২০-৩০ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই দামের স্থিতিশীলতাও নেই। আজ কম দেখছি, কিন্তু কাল সকালেই যে দাম বাড়বে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।”

আরেক ক্রেতা বলেন, “সরকার যদি বাজারের দিকে একটু নজর দেয়, তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরও কমবে। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম বাড়ায়-কমায়। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যাশা এই সরকারের কাছে।”

মাছ-মাংসের বাজার নিয়ে ক্রেতাদের সন্তুষ্টিতে বিক্রেতারাও আনন্দিত। তারা বলছেন, রমজানের মাঝামাঝি সময়ে এসে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম কমতির দিকে। বেচাকেনা কম থাকায় দামও কমেছে। এই অবস্থা বজায় থাকলে রমজানে দাম আর বাড়বে না।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়া বলেন, “এ সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। দাম কম থাকলে সবসময়ই বেচাকেনা ভালো থাকে। অনেক সময় সকালেই সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়, আবার বাজার বাড়তি থাকলে বরফ দিয়ে পরের দিনও বিক্রি করতে হয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2024 nabakal.com
Design & Development BY Hostitbd.Com