রাজধানীতে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন, ধর্ষণ এবং সহিংসতার প্রতিবাদে আজ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের মূল দাবি, অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন, যার ফলে ব্যস্ততম এই এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই বিভিন্ন কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন।
শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার, যেখানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা লেখা ছিল। তারা “বিচার চাই, বিচার চাই”, “ধর্ষণকারীদের ফাঁসি চাই”, “আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই”, “জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো”, “ধর্ষকদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে” ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। তাদের কণ্ঠে ছিল তীব্র ক্ষোভ ও ন্যায়বিচারের জন্য দৃঢ় সংকল্প।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কলেজগুলোর মধ্যে ছিল ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালবাগ মডেল কলেজ, উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, হামদর্দ কলেজ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা আর চুপ করে থাকতে পারছি না। সমাজে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বেড়ে চলেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।”
অবরোধের ফলে শাহবাগ এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, যা আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, “আমরা আমাদের বোনদের জন্য, সমাজের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমেছি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”
এই বিক্ষোভ নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থানের প্রতিফলন ঘটায় এবং সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।