দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ধর্ষণের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী আসিয়ার ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তারা রাজপথে নামেন।
রোববার (৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল থেকে বেরিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থীরাও মিছিলে যোগ দেন। এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, আসিয়া আসিয়া’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
রাত পৌনে ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রাস্তায় বসে অবস্থান নেন। তারা ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। রাত ১টা বাজতেই রাজু ভাস্কর্য এলাকা শিক্ষার্থীদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
এর আগে রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের নারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বের হন। তারা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি হলের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে অংশ নেন এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনীম রিমি বলেন, “আজকে আমরা এখানে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে রাজপথে নেমেছি। আমরা চাই, একটা ধর্ষকও যেন আর মুক্ত না থাকে। আমরা এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, “এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তা অবিলম্বে আমরা বিলোপ চাই। আমরা চাই না, কোনো অপরাধী বাইরে ঘুরে বেড়াক। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অতিদ্রুত কার্যকর করা হোক।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়াহ্ বলেন, “আজ একটা দিনের ভেতর মিনিমাম ৫টা ধর্ষণের নিউজ পেয়েছি। আরও থাকতে পারে, আমি সঠিক জানি না। ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এই জাতি কোনো দিন দেখেনি। এই দেশের ধর্ষকের মাইন্ডসেট হয়ে গিয়েছে, তারা জানে এর কোনো বিচার কোনো কালেই হয় না। তাদের পক্ষে আইনজীবী মামলা লড়ে, তারা জামিন পায়। আমরা এবার আর এরকম কোনো ঘটনা দেখতে চাই না। আমরা চাই, আসিয়াসহ অন্যদের ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যা দেখে আর কোনো পশু এমন কাজ করার সাহস পাবে না।”
অপরদিকে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “আমরা দেখে আসছি, দীর্ঘদিন ধরে এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলে আসছে। আমরা আর এভাবে চলতে দিতে পারি না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি জানাই।”