রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :

শেখ হাসিনা বলত, উন্নয়ন এই সরকার বলছে, সংস্কারঃ দুদু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৬৭ বার পঠিত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারা একটি ভালো নির্বাচন করে, নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেবেন- এমনটিই আমরা জানতাম। কিন্তু, আগে প্রতিনিয়ত যেমন শেখ হাসিনা বলতো ‘উন্নয়ন’, তেমনি এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) কথা হচ্ছে ‘সংস্কার’। কথায় কথায় তারা বলে ‘সংস্কার’৷ কিন্তু কোন জায়গায় সংস্কার, কিসের সংস্কার- এটি দৃশ্যমান নয়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের দোসরদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দুদু বলেন, এই সরকার এরইমধ্যে জাতির কাছে নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, এই সরকার খুবই সরল, আর না হয় ভুণ্ডুল। এই দুটোর একটি হবে। তারা নিজেরাই নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পাশে যে উপদেষ্টারা রয়েছেন, তারা কাজ করছেন। এমনটিই পত্র-পত্রিকায় আসছে।

তিনি আরো বলেন, এদের মধ্যে কেউ না কেউ ওই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের আশা নিয়ে বসে আছেন। যদি তাই হয় তাহলে সরকারের উচিত হচ্ছে, নিরপেক্ষতা হারানোর কথা বলে পদত্যাগ করে একটি কেয়ারটেকার সরকারের (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। যদি এই সরকার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তাহলে আমার মনে হয়, নিরপেক্ষতার প্রশ্নটি আগামী দিনে আরও বড় করে দেখা দেবে। আমরা যে ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি, সেটি আদৌ সম্ভব হবে কি না, এ বিষয়টি নিয়েও জনমনে প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। বিচার এবং একটি ভালো নির্বাচনে পদক্ষেপ না নিলে আরও বিতর্ক ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। সেজন্য অনতিবিলম্বে বর্তমান সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

 

আয়নাঘর সম্পর্কে দুদু বলেন, ৬ মাস পর গতকাল আমরা যে ঘটনাটি দেখলাম (আয়নাঘর), সেখানে মানুষদের নারকীয়ভাবে আটকে রাখা হতো, গুম করা হতো। সেই জায়গাগুলোর বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও পত্র-পত্রিকায় যেসব কথা আসছে সেগুলো দুঃখজনক, ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক। এখানে যাদের ধরে রাখা হয়েছিল, সেখানে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারাও ছিল বলে আমরা জানতাম। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা সেখানে বন্দি এবং অমানবিক জীবনযাপন করেছেন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে যেসব সংগঠন এবং সাংবাদিকরা কাজ করেছে গতকাল তাদের সেখানে নেওয়া হয়নি। বিদেশি সাংবাদিকরা সেখানে ছিল। কিন্তু, দেশের কোনো সাংবাদিককে আয়নাঘর পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এটা দুঃখজনক ঘটনা। আমার কাছে এই কারণে মনে হয় সরকার খুব বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে আছে। কখন কোনটা করতে হবে, কীভাবে করতে সেটা সরকার বুঝতে পারছে না।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকার ১৬-১৭ বছর ধরে নির্বিচারে খুন, গুমসহ দেশকে একেবারে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে রূপান্তর করার একেবারে শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সেই খুনিকে আমরা এখনো পর্যন্ত বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। তদন্তের নামে ছয় মাস পার হয়ে গেছে। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো, যদি বিচার করতে না পারেন, খুনিকে খুনি বলতে আপনাদের বাঁধা ও অস্বস্তি লাগে, তাহলে ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই।

এবং অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনার বিচারসহ তার দোসরদের যথাযথ বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।

 

নাগরিক সমাবেশে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতিত্ব করেন কে এম রকিবুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনর রশিদ, যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি সদস্য আরিফা সুলতানা রুমাসহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2024 nabakal.com
Design & Development BY Hostitbd.Com