জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য এবং দলীয় তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু হলো, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মনোনয়ন ঘিরে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন। অভিযোগ উঠেছে, তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের এই অর্থের প্রধান সুবিধাভোগী ছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধে জটিলতা সৃষ্টি হলে, প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী নামের এক নেতাকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং পরবর্তীতে জিএম কাদেরের স্ত্রী শরিফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
এছাড়াও, অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, জিএম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদ দখল করেন এবং দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে বিদেশে পাচার করেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুমোদিত ৩০১ সদস্যের পরিবর্তে বর্তমানে ৬০০-৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পদ বাণিজ্যের স্পষ্ট প্রমাণ।
জিএম কাদেরের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার নামে নগদ ৪৯.৮৮ লাখ টাকা, ব্যাংকে ৩৫.৯৫ লাখ টাকা এবং ৮৪.৯৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ির উল্লেখ রয়েছে। তার স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯.৫৯ লাখ টাকা, ব্যাংকে ২৮.০৯ লাখ টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। অভিযোগ আরও রয়েছে, তিনি সিঙ্গাপুর, লন্ডন, সিডনির মতো দেশে বেনামে সম্পদ পাচার করেছেন।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সত্যতা মিলেছে। তাই, কমিশন প্রকাশ্য তদন্তের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান দুদক মহাপরিচালক।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।