শনিবার রংপুরের গ্রান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
ফখরুল আরও বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ক্ষেত্রে রংপুরের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে তেভাগা আন্দোলন হয়েছিল, কৃষক বিদ্রোহ হয়েছিল। সেদিন নুরুলদীন ডাক দিয়েছিল, ‘কোনটে বাহে জাগো সবায়’। আজকে রংপুর থেকে তরুণরা ডাক দিয়েছে দেশের মানুষকে এই ভয়াবহ সরকারের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, লুটেরারদের বিরুদ্ধে। এই তারুণ্যের রোডমার্চ শুরু হয়েছে, সরকার পতনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তরুণরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটি অংশ। অথচ তারাই আজকে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। চাকরি নাই, কর্ম নাই, ব্যবসা নাই। বিএনপির নাম গন্ধ থাকলে ব্যবসা করা যাবে না। ব্যবসায়ী পরিবেশ পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের লোক ধ্বংস করছে। মহীয়সী নারী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারান্তরীণ করে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। চিকিৎসকরা অত্যন্ত চিন্তিত। চিকিৎসকরা বলছেন তার চিকিৎসা এদেশে আর নাই। দেশনেত্রীর চিকিৎসা দেশের বাইরে করা দরকার। কিন্তু এই স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশনেত্রীকে বাইরে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন না। অথচ ১/১১ এর সময় কানের চিকিৎসার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে গিয়েছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজকে অসহায় হয়ে গেছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে। চালের দাম, তেলের দাম, আলুর দাম, বিদ্যুতের দাম হু হু করে বেড়েছে। কিন্তু মানুষ বিদ্যুৎ পায় না, শুধু লোডশেডিং আর লোডশেডিং। কৃষি সেচ দিতে পারে না কৃষক। আজকে ব্যাংকগুলোতে টাকা চুরি করে আওয়ামী লীগের লোকেরা পাচার করছে বিদেশে। রিজার্ভ কমে গেছে। সরকার দলীয় লোকদের দুর্নীতির কারণে আজ রিজার্ভ কমছে, দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো না।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যেতে চাই। কেননা এই সরকার একটি প্রতারক, তারা জনগণের সঙ্গে বারবার প্রতারণা করছে। তারা বিগত সময়ের মতো এবারও একটা যেমন-তেমন নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এবারে সেই সুযোগ হবে না। এবারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করবে। তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। তাই বলতে চাই, সময় থাকতে পদত্যাগ করুন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিন। জনগণ আর এই সরকারকে একদিনের জন্যও দেখতে চায় না। মানুষ জেগেছে। মানুষ এই সরকারের পতন ঘটিয়ে ঘরে ফিরতে চায়।
রোডমার্চ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু ও সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডনসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
পরে, তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। রোডমার্চ রংপুর থেকে শুরু হয়ে দিনাজপুরে শেষ হবে। রোডমার্চে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে রংপুর বিভাগের বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সম্পাদনা – শেখ মোস্তারি জান্নাত।