প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখনো মঙ্গা ছিল না কিন্তু ২০০১ সালে যখন ওই খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে, ২ হাতে টাকা-পয়সা লুট করে। সে, তার ছেলেরা মিলে, এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আবার দেশে মঙ্গা শুরু হয়। ২০০৮ এর নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি। তারপর থেকে আমি যে পদক্ষেপ নিয়েছি, তারপর থেকে এ দেশের মানুষের কোনো কষ্ট হয় নাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রংপুর বিভাগের মর্যাদা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
এর আগে, রংপুরে ২৭টি উন্নয়ন প্রল্পের উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারসহ ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, প্রায় ১২শ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের অধীনে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতোপূর্বে দেওয়া প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগে একটি করে নভোথিয়েটার হবে। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে রংপুর উপশহরে নির্মিত হতে যাওয়া ৪শ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির ওপর ১০তলা বিশিষ্ট নভোথিয়েটার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়, রংপুর জেলার বিট্যাক সেন্টার, রংপুর মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেল এবং বিএমডিএ’র আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সেই সাথে উদ্বোধন করা ২৭টি প্রকল্পের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্পগুলো হলো- শেখ রাসেল মিডিয়া সেন্টার, শেখ রাসেল ইনডোর স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল সুইমিং পুল, রংপুর পালিচড়া স্টেডিয়াম, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। রংপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- রংপুর সিটি সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাল, রংপুর সিটি অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট ও স্টোর ইয়ার্ড। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- নলেয়া নদীর ১৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার পুনঃখনন, আলাইকুমারী নদীর ১৯ দশমিক ২৪ কিলোমিটার পুনঃখনন, নৈমুল্লা বিলের ১৪ দশমিক ৫৭ একর পুনঃখনন, চিকলী বিলের ১৯ দশমিক ৬৩ একর পুনঃখনন, ভারারদহ ও পাটোয়া কামরী বিলের ২২ দশমিক ৮৯ একর পুনঃখনন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- পীরগাছা উপজেলা চৌধুরানী থেকে শঠিবাড়ী আরএন্ডএইচ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজ, পীরগাছা উপজেলা ভেন্ডবাড়ি থেকে খালাশপীর পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজ, কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর থেকে রাস্তার পুর্ণবাসন কাজ। মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালগঞ্জ ঘাটে ঘাঘট নদীর উপর ৯৬ মিটার সেতু নির্মাণ, গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট-কাকিনা আরএন্ডএইচ সড়কে ৪০ মিটার সেতু নির্মাণ এবং কাউনিয়া উপজেলার পল্লীমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজ। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- রংপুর মেডিকেল কলেজ বহুমুখী ভবন, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় হেলেঞ্চা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়, পীরগঞ্জে মাদারগঞ্জ ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ১৪ নং চতরা ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট বেগম রোকেয়া আধুনিক হাসপাতাল এবং রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় খালাশপীর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।
অন্য প্রকল্পগুলো হলো- পীরগঞ্জ উপজেলার ২৫৪০ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং রংপুর কারখানা ও সংস্থা পরিদর্শন অফিস ভবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এসময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেছে।